সবুজবাংলা২৪ডটকম, চাঁদপুর : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে প্রায় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা উধাও হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানাজানি হয়েছে।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া (৪০) গত ২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) দীপংকর ঘোষকে (৩৮)। দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখায় অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না আসায় পুনরায় তাকে ফোন করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
একপর্যায়ে প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য তার স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। তিনি জানান, তার স্বামী দুপুর ১২টায় অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়েছেন।
এদিকে বিকেল হলেও দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত না হওয়ায় ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে তার কার্যকলাপে সন্দেহ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।
ইউসুফ মিয়া বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভল্টে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মোতাবেক ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। ১ সেপ্টেম্বর জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুব্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা পাওয়া যায়।
ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী, ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ছিল। গণনার সময় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ কিছু দিন ধরে কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগ নিয়ে আসতেন এবং সেটি নিয়ে অফিস ত্যাগ করতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ব্যাংকের ভল্টের একটি চাবি তার কাছে রক্ষিত থাকত। কৌশল অবলম্বন করে তিন নিজে অথবা অজ্ঞাত বিবাদীরা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া বলেছেন, আমি বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করেছেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।
মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন বলেছেন, অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।