সবুজবাংলা২৪ডটকম, ঢাকা : নোয়াখালীতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে এক রোহিঙ্গা কিশোরী ৭দিন ধরে উধাও রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের রোহিঙ্গা ইউনিটে এই ঘটনা ঘটে। পালিয়ে যাওয়া কিশোরীর নাম খতিজা মুন্নি (১৫)। সে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১২নং ক্লাস্টারের আবুল কালামের মেয়ে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, পুলিশ কনস্টেবল রিয়াজুর রশিদ ওরফে নয়ন (২৭) ভাসানচর থানায় কর্মরত ছিলেন। ওই সময় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কিশোরী খতিজার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে অনেক দিন ধরে মুঠোফোনে তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলে।অভিযোগ রয়েছে, কনস্টেবল নয়ন ভাসানচরে দায়িত্বে থাকাকালীন নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার পাশাপাশি মদ, গাঁজা সেবন করে নেশাগ্রস্ত ছিল। মাসখানিক আগে নয়নকে ভাসানচর থানা থেকে ক্লোজ করে নোয়াখালী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে নয়নকে নোয়াখালী পুলিশ লাইন রোল কলে পাওয়া যাচ্ছে না। নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের রোহিঙ্গা ইউনিট থেকে একজন রোহিঙ্গা কিশোরী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি হাসপাতাল থেকে আমাকে জানানো হয়। আমাদের কাজ হচ্ছে চিকিৎসা দেয়া। তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব পুলিশের। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে রোহিঙ্গা কিশোরী নিখোঁজের বিষয়টি তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ সদস্য অনুপস্থিত আছে এটা সত্য। ইন-ডিসিপ্লিন ও কর্তব্য কাজে উদাসীনতার কারণে তাকে ভাসানচর থানা থেকে নিয়ে আসা হয়।
নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ দুই বিএনপি নেতার
নোয়াখালীর-৪ (সদর-সুবর্ণচর) সংসদীয় এলাকার দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কার দাবি করেছেন ছাত্রদল ও যুবদলের ৬ নেতাকর্মী। গত রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বরাবর লিখিত অভিযোগে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ এনে তাদের বহিষ্কার দাবি করা হয়। অভিযোগের অনুলিপি দেয়া হয়েছে, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে। বহিষ্কার দাবি করা নেতারা হলেন- নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ ও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই দুই বিএনপি নেতা এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কসহ গভীরভাবে আঁতাত করে ২০১৩-২০১৪ইং সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় বিদেশ ভ্রমণ করে। এরপর বিদেশে একসঙ্গে নৌবিহার করে। পরবর্তীতে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্বৈরাচারের সঙ্গে এই আঁতাতের কারণে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা একটি জিডিও হয়নি। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, জাকারিয়া ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় সভাপতিত্ব করে। যোগাযোগ করা হলে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, শিহাব উদ্দিন শাহীনের ভোট করার প্রশ্নই আসে না। শাহীন একজন এডভোকেট ও বার এসোসিয়েশনের সদস্য। সে হিসেবে তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। আমি বারের সভাপতি। বারের নিয়ম অনুযায়ী বারের কোনো একজন সদস্য বা অতিথি গেলে তাকে রিসিভ করা। সেখানে আমি এক লাইনে বক্তব্য দিয়েছি। আমরা ভোটের বিরুদ্ধে। নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আমার আঁতাতের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি যখন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ছিলাম। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এবং একরামুল করিম চৌধুরী স্থানীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। এই কারণে তার সঙ্গে আমার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা সাক্ষাৎ হতো। এই ছবি দিয়ে আমাকে বার বার ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়। এভাবে ষড়যন্ত্র করে ১০ বছর আমাকে বিএনপি’র রাজনীতির বাহিরে রাখা হয়েছে। এজন্য আমার নামে মামলা নেই। নোয়াখালী জেলার অনেক বড় বড় বিএনপি নেতার সঙ্গে সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছবি রয়েছে। যে ছবি চাইলে আমরাও দিতে পারি। নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের আলোকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।