সবুজবাংলা২৪ডটকম, নোয়াখালী : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও চুরির মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলার বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন, বসুরহাট বাজারের মেসার্স হুমায়ুন টিম্বার ও ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক ফিরোজ আলম মিলন। মামলায় আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে তার ভাই শাহাদাত হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে। তারা দুজনেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। এ ছাড়া কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ আরও ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।বিচারক মো. ইকবাল হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।বাদীর আইনজীবী আবদুর রহিম সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাদের মির্জা দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে তাঁর সহযোগীদের দিয়ে বাদী ফিরোজ আলম মিলনের প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকা চুরিসহ লুটপাট ভাঙচুর করে ২০ কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতি করেছেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাদীর বসুরহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেসার্স হুমায়ুন টিম্বার অ্যান্ড স মিল ও মেসার্স ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্সে লুটপাট করেন। এতে নগদ ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ ১৫ কোটি টাকার মালামাল গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। মামলার বিষয়ে জানতে আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নোয়াখালীতে বন্যায় মহামারি, হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ভিড়
গত দুই সপ্তাহের বন্যায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে নোয়াখালিতে। ৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কক্ষ, মেঝে ও করিডরে রোগীদের ভিড়। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অস্থায়ী ওয়ার্ড খোলা হয়েছে পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে। সেখানে কোনো শয্যা নেই। মেঝেতে শয্যা পেতে চলছে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা। কোনো কোনো শয্যায় একসঙ্গে ২-৩ জন রোগীকে থাকতে দেওয়া হচ্ছে। গত ২২ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৯৭২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ১১৭ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ২০ শয্যার জায়গায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৫০ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগী মারা গেছেন। ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পানিবাহিত রোগী বেড়েছে ১০ থেকে ১২ গুণ। এতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরা।রোগীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার লোকজনও কাজ করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে বলে জানান আবাসিক মেডিকেল অফিসার। বেসরকারি সংস্থা থেকে লোকবল নিয়োজিত করা হয়েছে। এরপরও সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পানিবাহিত এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকায় গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা শিবির স্থাপনের দাবি বানভাসিদের।