সবুজবাংলা২৪ডটকম, ঢাকা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মো: নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে ৮.৪০ মিনিটে মৃত্যু হয় তার। এছাড়া তার ছেলে মাসুদ সাইদী ফেসবুক পোস্টেও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন।
এর আগে রোববার (১৩ আগস্ট) রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে বিএসএমএমইউয়ের ব্লক ডি কার্ডিয়াক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যায় ঢাকায় পাঠায় কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর হার্টে পাঁচটি রিং পরানো হয়েছিল। এছাড়া তিনি দীর্ঘ দিন যাবত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। এ ছাড়াও তিনি পায়ের গিড়ায় ব্যথাসহ বার্ধক্যজনিত নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। অপরের সাহায্য ছাড়া তিনি একাকী হাঁটা-চলা ও উঠা-বসা কোনোটাই করতে পারছিলেন না।
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পিতা ইউসুফ সাঈদী যিনি একজন স্বনামধন্য আলেম ছিলেন। তার মায়ের নাম গুলনাহার বেগম। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চার ছেলে- মরহুম রফিক সাইদী, শামীম সাইদী, মাসুদ সাইদী এবং নাসিম সাইদী।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিতার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন। পরে তিনি খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় কিছুদিন এবং পরে ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করেন। কামিল পাশ করার পর বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি, মনোবিজ্ঞান ও বিভিন্ন তত্তের উপর দীর্ঘ ৫ বছর অধ্যায়ন করেন।
১৯৭৯ সালে সাধারণ সমর্থক হিসেবে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বাংলাদেশ জামায়াত-ই- ইসলামী এ যোগদান করেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দ্বায়িত্ব পালন করেন।
আল্লামা সাঈদী পবিত্র কুরআনের তাফসীর ‘তাফসীরে সাঈদী’ নামে ইতিমধ্যেই ৫ খন্ড রচনা করেছেন। তাফসীরের বাকি কাজ চলমান আছে। মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা) এর জীবনীমূলক গ্রন্থ ‘সীরাতে সাইয়্যেদুল মুরসালিন’ ৫৮৪ পৃষ্টায় রচনা করেছেন।
এ ছাড়াও তিনি ফিকহুল হাদিস, কুরআন এবং বিজ্ঞান, ইসলামে নারীর অধিকার, ইসলামে শ্রমিকের অধিকার, ইসলামের রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ইসলামসহ নানা বিষয়ে এ পর্যন্ত তাঁর ৭৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকা ও লন্ডন থেকে তার ৪টি বই ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত হয়।