• শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:০২ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
শিরোনাম :

মাধবদীতে ডাইং কারখানার শ্রমিককে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি

মোঃ আল আমিন : / ১৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, মাধবদী (নরসিংদী) : নরসিংদীর মাধবদীতে নিলা ডাইং কারখানায় শ্রমিক নেজামুল ইসলাম ওরফে নাজমুল (৩৫) নামের এক রং মাস্টারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় একই ডাইং কারখানার দুই শ্রমিককে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তার করে ৩১ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে একজন হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার দুজন জানান, রঙের ড্রাম খোলার ধাতব যন্ত্র দিয়ে মাথায় পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর লাশ টেবিলের ওপর উপুড় করে ফেলে রেখে চলে যান তাঁরা। গত ৩০ জুলাই রোববার ভোর চারটার দিকে রাতের সিপটে কাজ চলার সময় সদর উপজেলার মাধবদীর ভগীরথপুর এলাকার নীলা ডাইং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিং মিলের চতুর্থ তলার একটি কক্ষে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। পরে সকাল ১০টার দিকে মাধবদী থানা পুলিশ ওই কক্ষ থেকে নেজামুলের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে কারখানার ৯ জন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। নিহত নেজামুল ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চুডবাজার এলাকার নেহালিয়াকান্দা গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি চার বছর ধরে ডাইং কারখানার রং ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনায় রোববার রাতেই মামলা করেন নেজামুলের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম। এ মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁরা হলেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের বাইনগর গ্রামের জহিরুল মিয়া (২৫) ও নেত্রকোনার কেন্দুয়ার পাড়াতলী গ্রামের আবুল কালাম (২২)। জহিরুল মাধবদী আমলী আদালতের বিচারকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা দু’জনই কারখানাটির রং মাস্টার। পরে পুলিশ জানায়, লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। ওই সময় নেজামুলের কক্ষে কারা কারা আসা-যাওয়া করেছেন, তা শনাক্ত করা হয়। তবে কে বা কারা হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত, তা জানা যাচ্ছিল না। কারণ, তাঁর কক্ষটি ছিল সিসিটিভি ক্যামেরার আওতামুক্ত। পরে ওই কক্ষে আসা-যাওয়া করা রাতের সিপটের মোট ৯ জন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়। গতকাল দিনভর ও রাতভর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখালে একপর্যায়ে ওই দু’জন হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে জানান, দু’জন মিলে রং ইনচার্জকে হত্যা করেছেন। তাদের স্বিকারোক্তি পেয়ে বাকি সাতজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারিকুল ইসলাম জানান, কারখানার রং ইনচার্জের দায়িত্ব পেতে নেজামুলকে পরিকল্পিতভাবে রঙের ড্রাম খোলার ধাতব যন্ত্র দিয়ে ওই দু’জন মিলে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর লাশ টেবিলের ওপর উপুড় করে রেখে তাঁরা দুজন অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা বুঝতে পারেননি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকীবুজ্জামান বলেন, হত্যাকা-ে জড়িত দু’জনকে শনাক্ত করা গেছে। এই ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আমাদের কাছে হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেছেন।
রোববার ভোররাত সাড়ে তিনটার পর ডাইং কারখানাটির চতুর্থ তলার ফ্লোরে রাতের সিপটে কর্মরত শ্রমিকেরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানান, নেজামুল ইসলাম তাঁর কক্ষের টেবিলের ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, রক্তে ওই কক্ষের ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে। খবর পেয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ মাধবদী থানা-পুলিশে খবর দেয়। পরে উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলে রাব্বি ঘটনাস্থলে গিয়ে টেবিলের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category