• বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

স্বাস্থ্য উন্নয়নে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন

আতাউর শাহ্ : / ২২ Time View
Update : বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, নওগাঁ : নওগাঁ সদরের লিটন ব্রীজের পার্শ্বে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রুরাল এসোসিয়েশন ফর নিউট্রিশন ইমপ্রুভমেন্ট (রানী) এনজিও এর উদ্যোগে বুধবার বেলা সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অবস্থান কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেন অবস্থানকারীরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতিও রয়েছে। তারমধ্যে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, সারাদেশে ডিজিটাল হাসপাতাল- ‘ইনস্ট্যান্ট ডক্টর ভিডিও কল ও চ্যাট’, টেলিমেডিসিন সেবা চালু, কমিউনিটি ক্লিনিক ইত্যাদি চালু রয়েছে। যার ফলে এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০ অর্জন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পোলিও নির্মূল সনদ লাভসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কারও অর্জন করেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা অনুসারে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ” হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী। এর চারটি ভিত্তি হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ। এটির বাস্তব রূপ দেবার জন্য অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি স্মার্ট নাগরিকের জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা জরুরী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” থেকে “স্মার্ট বাংলাদেশে” রূপান্তরের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উপাদান স্মার্ট স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
স্বাস্থ্যখাতের এই উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। গত ১০ বছরের বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, প্রতিনিয়তই বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয়। এভাবে ক্রমবর্ধমান হারে চিকিৎসাখাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেলে উদ্ভুত পরিস্থিতি রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য বিরাট সংকট তৈরী করবে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে স্বাস্থ্যখাতের জন্য নির্ধারিত বাজেটের সিংহভাগই চিকিৎসাকেন্দ্রিক। শুধুমাত্র চিকিৎসাকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অর্থ ব্যয় করেও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের লক্ষ্যে চিকিৎসাখাতে বরাদ্দের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় তুলনামূলক অল্প বিনিয়োগ (২-৫%) এর মাধ্যমে সহজে চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের চলমান উদ্যোগসমূহের সুফল সংহত করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রগুলোতে গুরুত্ব প্রদান করা হলে তা ভিশন ২০২১-২০৪১ এর স্বাস্থ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
বক্তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১” লক্ষ্য রেখে এধরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে চিকিৎসা ব্যয় অনেক কমে আসবে এবং স্বাস্থ্যের উন্নয়ন হবে। অন্যথায় জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেলেও বার্ধক্যজনিত রোগসহ অসংক্রামক (হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ) রোগ আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
যার ব্যয়ভার রাষ্ট্র বা জনগণের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন উদ্যোগ স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। পাশাপাশি কৃষি, খাদ্য, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলো সমন্বিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের ২৩টি দেশ “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এটি আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এবং নির্ধারিত ফান্ড দ্বারা পরিচালিত এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে গবেষণার আলোকে কর্মপন্থা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে থাকে।
এছাড়াও হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গবেষণা ও এডভোকেসির পাশাপাশি যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন তামাক, এলকোহল, অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ন্ত্রণ এবং সম্ভাব্য অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় সফলতার সাথে কাজ করছে। তারা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় তুলনামূলক অল্প বিনিয়োগ করে সহজে রাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তামাক এবং এলকোহলের উপর নির্ধারিত কর আরোপ করে এ ধরণের ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে। যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আরোপিত কর সরাসরি হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠনে ভূমিকা রাখছে। যারফলে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক সফলতা এসেছে।
রুরাল এসোসিয়েশন ফর নিউট্রিশন ইমপ্রুভমেন্ট (রানী) এনজিও সংস্থার সভাপতি ফজলুল হক খানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, আদর্শ রবিদাস, উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি বিদেশ রবিদাস, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রবিদাস, নির্বাহী সদস্য মহেশ রবিদাস, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, রুরাল এসোসিয়েশন ফর নিউট্রিশন ইমপ্রুভমেন্ট (রানী) ও অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category