• বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

দাকোপে বেড়েছে ওয়ান টাইম পণ্যের ব্যবহার

জি এম জাকির হোসেন : / ২৮ Time View
Update : রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, দাকোপ (খুলনা) : খুলনার দাকোপে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন হাট বাজরসহ যত্রতত্র ব্যাপক ভাবে অবাধে রমরমা ব্যবহৃত হচ্ছে পলিব্যাগ ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক (ওয়ান টাইম) পণ্য। বছরের পর বছর পরিবেশে টিকে থেকে এসব প্লাস্টিক পণ্য জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করে চলেছে। প্লাস্টিক দূষণের নেতিবাচক প্রভাবও পড়ছে সামগ্রিক জীববৈচিত্র্যের উপর। ফলে দিন দিন পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সরেজমিন দাকোপের বাজুয়া, দাকোপ, কৈলাশগঞ্জ, লাউডোব, বানিশান্তা, তিলডাংগা, কামারখোলা, পানখালিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ২০০২ সালে সরকার সকল প্রকার পলিথিন শপিং ব্যাগ ব্যবহার সম্পর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন। এছাড়া উচ্চ আদালতও পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করেন। একই সাথে দেশব্যাপী নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ পলিথিন কারখানা বন্ধ এবং যন্ত্রপাতি জব্দকরণের মাধ্যমে পলিব্যাগের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বলেন। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর কিছুদিন পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার থমকে পড়লেও পূনরায় আবার বিভিন্ন পন্থায় বাজারে চলে এসেছে। পলিব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও আইন বাস্তবায়নে কোন কার্যকারি পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয় না। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো এই উপজেলার সর্বত্র পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন হোটেল, মুদি দোকানসহ রাস্তার পাশে ও পাড়া মহল্লায় গড়ে ওঠা সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সামগ্রীর সাথে এই পলি ব্যাগ ফ্রি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ছোট বড় বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, চালনা বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য মজুদ করেন। পরে বিভিন্ন হাট বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী দরে বিক্রি করছেন। পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য ব্যবহারের ফলে রাস্তাঘাট, নদী, নালা, ড্রেন ও মাটির গর্তে আবর্জনায় ছড়িয়ে পড়ছে। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের লোক দেখানো অভিযানে দুই একজন কথিত নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে জরিমানা করলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এর ব্যবহার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ ছাড়াও বাজারে নাইলন নেটের যে ব্যাগও ব্যবহার হচ্ছে তাও পলি ব্যাগেরমত পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য সমান ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থার্মোকলে থাকে থার্মোপ্লাস্টিক যৌগ পলিস্টাইরিন। পলিস্টাইরিন ও ফেনিলিথিন পলিমারাইজেশনে পলিস্টাইরিন যৌগ তৈরি হয়। এটি হচ্ছে বিষ। পাশাপাশি ‘ওয়ান টাইম’ পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘বিসফেনল এ’ ও নানা রাসায়নিক। আর এসব রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে প্রবেশ করে শরীরের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি কারণ হতে পারে ক্যান্সারেরও। এ অবস্থায় ‘ওয়ান টাইম’ এর বিকল্প হিসেবে কাগজের তৈরি পণ্য ব্যবহারের কথা বলছেন পরিবেশবিদরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) খুলনা বিভাগীয় নেটওয়ার্ক কমিটির ও ওয়ার্কাস পাটির জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায় জানান, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এবং প্রশাসনের গাফিলতির কারনে প্রকাশ্যে এভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের মাসিক সভায় কঠোর সিদ্ধান্ত নিলে অতিদ্রুত পলিথিন ব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্দ করা সম্ভব। আসলে পলিথিন বা প্লাস্টিক একটি অপচনশীল বস্তু। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। এটি বন্দে প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকার সচেতন ব্যাক্তিদেরও এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মনে করেন। এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ বালা বলেন, ওয়ান টাইম পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘বিসফেনল এ’ ও নানা রাসায়নিক। আর পণ্যে ঠান্ডা খাবার রাখলে তেমন একটা ক্ষতি না হলেও গরম খাবার সংরক্ষণ করা ভয়ংকর। এসব রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে প্রবেশ করে শরীরের ভারসাম্য ধীরে ধীরে নষ্টের পাশাপাশি কারণ হতে পারে ক্যান্সারেরও। এব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া সুলতানা এ প্রতিবেদকে জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে পলিথিন ব্যাগ নির্মুলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category