• সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

আজমত উল্লা খানকে হারিয়ে দেশের দ্বিতীয় নারী সিটি মেয়র জায়েদা খাতুন

আওরঙ্গজেব কামাল : / ৬ Time View
Update : শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, ঢাকা : ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পর গাজীপুরবাসী পেলেন আরেক নারী মেয়র জায়েদা খাতুন। গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র নির্বাচনী হলফনামায় পেশা ‘ব্যবসা’ লেখা হলেও মূলত তিনি গৃহিণী স্বশিক্ষিত। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। ২০১১ সালে দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। ওই নির্বাচনে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার। আইভীর পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন জায়েদা।নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী- জায়েদা খাতুনের জন্ম ১৯৬২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। পিতার নাম সামছুল ইসলাম, মা আফাতুন। স্থায়ী ঠিকানা কানাইয়া, গাজীপুর সদর, গাজীপুর। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বশিক্ষিত’। তার স্বামী মো. মিজানুর রহমান পাঁচ বছর আগে মার গেছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য নেই। হলফনামায় তার আয় দেখানো হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসাবে নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা। ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে শেয়ারমূল্য দেখিয়েছেন দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। ঘোষিত ফলাফলে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত জায়েদা খাতুনের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। মনোনয়নপত্র দাখিল করার আগে জায়েদা খাতুনকে রাজনীতির মাঠে দেখা যায়নি। মূলত ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজকে ভিত্তি করেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। জাহাঙ্গীর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকও। তিনি সিটি মেয়র হিসেবে পুরো মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। মনোনয়নপত্র দাখিল করার আগে জায়েদা খাতুনকে রাজনীতির মাঠে দেখা যায়নি। মূলত ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজকে ভিত্তি করেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। জাহাঙ্গীর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকও। তিনি সিটি মেয়র হিসেবে পুরো মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।রাত ১টা ৩২ মিনিটের দিকে গাজীপুর জেলা পরিষদ ভবনের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে নির্বাচনের ‘ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র’ থেকে এই ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। ৪৮০ কেন্দ্রের ফলাফলে টেবিলঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে জায়েদা খাতুন জয়লাভ করেন। ঘোষিত এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙল প্রতীকে এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট, জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপ ফুল প্রতীকে মো. রাজু আহম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট। এর আগে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ চলে। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। এদিন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, মারামারি-হানাহানি বা কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটার এবং প্রার্থীরা। এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে অংশ নেন ৩৩৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী ছিলেন।গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছে ১৮ জন। তবে জায়েদা খাতুন বলেন আমার নির্বাচনীয় এজেন্ট ছাড়া শুধু জনগনের সকলে দোয়া ও ভালোবাসায় আমি জয়ী হয়েছি। আমি সকলের সাথে নিয়ে গাজীপুর সিটির উন্নয়ন করতে চায়। আপনারা আমার ও আমার ছেলের জন্য সকলে দোয়া করবেন। এ বিষয়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, এখানে নৌকার জয় হয়েছে, পরাজয় হয়েছে ব্যক্তির। মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। আমি এর আগে মেয়রের দ্বায়িত্ব পালন করেছি। আমি আমার সকল অভিজ্ঞতা দিয়ে নগরবাসীর জন্য ভালো কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। এ বিষয়ে ভোটকেন্দ্রে থাকা প্রিজাইডিং অফিসাররাও কিছু কেন্দ্রে টেকনিক্যাল সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া যারা ভোটার তাদের অনেককে বিশেষ করে বয়স্কদের ইভিএম এর ব্যবহার বুঝাতেও সময় লেগেছে বলে ভোট গ্রহণে ধীরগতি ছিল বলে জানান কর্মকর্তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category