• সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]

রংপুর বিভাগে পেপার মিল নিয়ন্ত্রণ করলেই ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে

নিজস্ব প্রতিনিধি : / ৯ Time View
Update : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, রংপুর : রংপুর বিভাগের ৮ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হাটবাজারে জাল ব্যান্ডরোল যুক্ত বিড়ি ও লাইসেন্সবিহীন বিড়ি বাজারজাত বা বিপণন করে আসছে। তবে এই ধরনের বিভিন্ন কোম্পানি বিড়ি বিক্রয় করে আসছে নামে-বেনামে। রংপুর জেলা বিড়ি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলায় বিভিন্নভাবে খোঁজ খবর নিয়ে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে কর্মরত সাংবাদিকরা আরো তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিরবিচ্ছিন্নভাবে তদন্ত করলে দেশের রাজস্ব খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা যেতে পারে বলে সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে রংপুর বিভাগে মাত্র তিনটি বিড়ি কোম্পানি ব্যতিত অন্যান্য কোম্পানিগুলো সরকারের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বছরের পর বছর ব্যান্ডরোল ফাঁকিসহ নানান অনিয়মের মধ্য দিয়ে ব্যবসা করে আসছে। যার বিপরীতে শুধু রংপুর বিভাগ থেকে প্রতি বছর সরকার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
অনুসন্ধানে রংপুর বিভাগে তিনটি বিড়ি কোম্পানি সরকারের নির্ধারিত মূল্যে অর্থাৎ ১৮ টাকায় বিড়ি বিক্রি করছে সেগুলো হলো- হরিন বিড়ি, মতি বিড়ি ও আনছার বিড়ি। অন্যান্য বিড়ির কোম্পানিগুলো ৬ টাকা ৮ টাকা ৯ টাকা মূল্যে প্রতি প্যাকেট বিড়ি বিক্রি করে আসছে। এছাড়া অনেক নামি-দামি বিড়ি কোম্পানি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ৬ টাকা ৮ টাকায় প্রতি প্যাকেট বিড়ি বিক্রি করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাঠ পর্যায় যেয়ে মনিটরিং করলে সত্যতা পাবে বলে দাবি করেছে রংপুর জেলা বিড়ি মালিক সমিতি।
তারা জানায়- বাংলাদেশ প্রায় ৪ হাজার বিড়ি কোম্পানি রয়েছে। শুধু রংপুর বিভাগে ৪ শতাধিক বিড়ি কোম্পানি অনুমোদন রয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা যায়- ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। দেশে সব বিড়ি কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে রাজস্ব প্রদান করলে রাজস্বের পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যাবে।
লাইসেন্সবিহীন ও ব্যান্ডরোল ফাঁকি দেয়া বিড়ি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক তদারকি করার সুযোগ রয়েছে বলে রংপুর জেলা বিড়ি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম ডিনার জানান।
তিনি দায়িত্ব নিয়ে উল্লেখ করেন- বাংলাদেশে মাত্র দুইটি পেপার মিল বিড়ি তৈরির কাগজ উৎপাদন করে। বিড়ি কোম্পানির অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করার একমাত্র উপায় হচ্ছে- বিড়ি তৈরির কাগজ উৎপাদনকারীর প্রতিষ্ঠান দুটিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রাখা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তত্ত্বাবধানে উৎপাদিত বিড়ি তৈরির কাগজের সাথে বিড়ি উপর সরকার নির্ধারিত ব্যান্ডরোল ৯ টাকা ৬৪ পয়সা একত্রিত করলে বা পোস্ট অফিস থেকে উত্তোলনকৃত ব্যান্ডরোল প্রত্যাহার করে সরাসরি বিড়ি তৈরির কাগজের সাথে নির্ধারণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ হলে বা সম্পৃক্ত করে দেয়া হলে, বিড়ি সেক্টরে শতভাগ দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে কম মূল্যে বা জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ি কোম্পানিগুলোর ৬ টাকা ৮ টাকায় বিড়ি বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন- পোস্ট অফিস থেকে বিড়ির ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করতে হয়, অপরদিকে বিড়ি তৈরির কাগজ দুটি মিল থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এতে করে বিভিন্ন ধরনের শুভংকরের ফাঁকির সুযোগ রয়েই যায়। একদিকে সৎ ব্যবসায়ীরা তাদের বিড়ির ফ্যাক্টরি লোকশান দিয়ে বন্ধের মুখে পড়ছে, অন্যদিকে ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আসছে একশ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ী। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হচ্ছে বিড়ি তৈরির কাগজের উপর সরকারের ৯ টাকা ৬৪ পয়সার ব্যান্ডরোলের এই মূল্যটি লাগিয়ে দিলে দুর্নীতি সিলগালা হয়ে যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে।
তরিকুল ইসলাম ডিনার জানান- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উপরোক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করলে সরকারের নির্ধারিত মূল্য অর্থাৎ ১৮ টাকার নিচে কোন বিড়ি বিক্রয় করতে পারবে না। এতে জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে অবৈধভাবে বিড়ি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে বিড়ি সেক্টরে জাল ব্যান্ডরোলের ব্যবসা, ভ্যাট, ট্যাক্সসহ সব অনিয়ম ও দুর্নীতির বন্ধ হয়ে আসবে। এতে প্রতিষ্ঠিত বিড়ি কোম্পানি সরকারকে কোটি কোটি টাকা ভ্যাট ট্যাক্স প্রদান করতে পারবে। নয় তো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে প্রতি বছর সরকার হারাবে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব যা রাষ্ট্রের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
মালিক সমিতির এই নেতা জানান- এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে প্রতি বছর ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হবে। এছাড়া বর্তমান ট্যারিফ মূল্য ১৮ অব্যাহত রেখে ট্যাক্স আহরণ উত্তম হবে। বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কঠোরভাবে তদারকি করলে এই খাতে রাজস্ব যথাযথ বৃদ্ধি পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
এক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন- এই বিষয়ে সরকার বাহাদুরের সাথে রংপুর জেলা বিড়ি মালিক সমিতি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। এতে করে এই সেক্টরের বড় ধরনের ভুল ত্রুটি উপস্থাপন হবে। অন্যদিকে আলোচনার টেবিলে বসলে সরকারের বছরে কয়েক হাজার কোটির রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category