• সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

বিশ্বসেরাদের বাংলাওয়াশ করল টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক / ৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, ঢাকা : প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে ১৬ রানে হারিয়ে ইংলিশদের বাংলাওয়াশের (হোয়াইটওয়াশ) স্বাদ দিল টাইগাররা। যেকোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথমবার এমন কীর্তি গড়ল বাংলাদেশ।
কর্মব্যস্ত দিনেও আজ তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না মিরপুরের গ্যালারিতে। হোম অব ক্রিকেট খ্যাত শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম ছেয়ে যায় লাল-সবুজে। আশা নিয়ে মাঠে আসা সমর্থকদের হতাশ করেননি সাকিব আল হাসানরা। বহুদিন পর আবারও শোনা গেল আতহার আলির কণ্ঠে সেই বিখ্যাত উচ্চারণ ‘বাংলাওয়াশ’।
মঙ্গলবার সিরিজের শেষ ম্যাচে সফরকারী ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যেই খেলতে নামে টাইগাররা। আজ ব্যাট হাতে আলো ছড়ান লিটন (৭৩) ও শান্ত (৪৭)। তাদের ব্যাটে ভর করে ২ উইকেটে ১৫৮ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকরা। জবাবে ২০ ওভারে ১৪২ রান তুলতে পারে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ পায় ১৬ রানের জয়।
টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের অনবদ্য উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৫ রান।
ক্যাচ মিস আর বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়ায় বারবার সুযোগ হারায় সফরকারীরা। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আর্চারের বলে শর্ট থার্ডম্যানে রনির সহজ ক্যাচ মিস করেন তরুণ স্পিনার রেহান আহমেদ।
যদিও জীবন পেয়ে তা কাজে লাগাতে পারেননি রনি। ২২ বলে ২৪ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হয়ে যান তিনি।
আরেক প্রান্তে তখন রীতিমতো ঝড় তোলেন লিটন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারছিলেন না তিনি। শেষ ম্যাচে এসে খোলস ছেড়ে বের হলেন। ৪১ বল খেলে ৮ বাউন্ডারিতে অর্ধশতক পূরণ করেন লিটন।
ফিফটির পর দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন তিনি। যদিও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ক্রিস জর্ডানের করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে সল্টের হাতে ধরা পড়েন। তার আগে ৫৭ বল খেলে ১০ চার আর এক ছক্কায় করেন ৭৩ রান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস।
এদিকে রনি ফিরে যাওয়ার পর ওয়ান ডাউনে নামা শান্ত আজও দারুণ ব্যাটিং করেন। ২ ছয় আর ১ চারে ৩৬ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
শেষদিকে বংলাদেশের ইনিংসে রান একটু কম ওঠে। ২ উইকেট পড়ার পর মাঠে নামা সাকিব আজ ব্যাটে হাতে ভালোকিছু করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। তবে এরপর বাটলার আর মালান দুর্দান্ত জুটি গড়ে ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাসকিন-মুস্তাফিজদের ‘ঘুরে দাঁড়ানো’ বোলিংয়ে শেষটা রাঙাল বাংলাদেশই।
ইংল্যান্ডের ইনিংসের প্রথম ওভারে সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার প্রথম উইকেট।
৫ রানে সল্টকে হারানোর পর মালান-বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। বিশেষ করে ডেভিড মালান এদিন শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
দ্বিতীয় উইকেটে জস বাটলার আর মালানের পঞ্চাশ রানের জুটিতে সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ইংলিশরা। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলে ফেলে তারা।
তবে প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে দেন পেসার মুস্তাফিজ। ৫৩ রান করা মালানকে ফেরান তিনি। মুস্তাফিজের লাফিয়ে ওঠা বলে ব্যাট লাগিয়ে লিটনের হাতে ধরা পড়েন মালান।
মালান ফেরার পরের বলে রান আউটে কাটা পড়েন বাটলারও। দুর্দান্ত এক ডিরেক্ট থ্রোতে তাকে রান আউট করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ইংলিশ অধিনায়ক ফিরে যান ৪০ রান করে।
একই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। বিপরীতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইংল্যান্ড।
এরপর মঈন আলিকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ৯ রান করা এই অলরাউন্ডারকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। একই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকেও বোল্ড করেন তাসকিন। ফলে ২ উইকেটে ১০০ থেকে ৫ উইকেটে ১২৩ হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য ৩৬ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই স্যাম কারানকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এরপর লেজের সারির ব্যাটাররা চেষ্টা করলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা।
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১৬ রানের জয় পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে এবং দ্বিতীয়টিতে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছিল সাকিব বাহিনী। ৩ ম্যাচ সিরিজের ৩টিতেই জিতে টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৫৮/২ (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*; কারান ৪-০-২৮-০, ওকস ১-০-১২-০, রশিদ ৪-০-২৩-১, আর্চার ৪-০-৩৩-০, রেহান ৩-০-২৬-০, মঈন ১-০-১২-০, জর্ডান ৩-০-২১-০)।
ইংল্যান্ড : ২০ ওভারে ১৪২/৬ (মালান ৫৩, সল্ট ০, বাটলার ৪০, ডাকেট ১১, মঈন ৯, কারান ৪, ওকস ১৩*, জর্ডান ২*; তানভির ২-০-১৭-১, তাসকিন ৪-০-২৬-২, সাকিব ৪-০-৩০-১, হাসান ৪-০-২৯-০, মুস্তাফিজ ৪-০-১৪-১, মিরাজ ২-০-১৮-০)।
ফল : বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ : লিটন কুমার দাস (৭০ রান)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category