• সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্প-শিক্ষায়তন বক্তৃতামালায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০২৩

সবুজবাংলা২৪ডটকম, ঢাকা : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) উদ্যোগে আয়োজিত ‘শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন’ বক্তৃতামালার ১৫তম পর্বের মূল বক্তা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌদুরী বলেছেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছেন, যা রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু এরপরও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে তাদেরকে এমন কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যেগুলোর সমাধানের এখতিয়ার তাদের হাতে নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কোর্স কারিকুলামে প্রযোজনীয় পরিবর্তন ও সংযোজনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে মূখ্যভুমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, প্রাণ- আরএফএল গ্রুপ বিশ্বেও ১৪৫ টি দেশে পন্য রপ্তানী করছে। এ গ্রুপের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার এবং পরোক্ষভাবে ১৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হ্েচ্ছ।
তিনি তার পিতা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল (অবঃ) আমজাদ খান চৌধুরীর স্মরণে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করেন এবং আরো বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তারা কাজের জন্য নতুন পদ তৈরি করছেন। কিন্তু উক্ত পদ পূরণের জন্য উপযুক্ত ও দক্ষ লোকবল না পেয়ে তাদেরকে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নিরূপায় হয়ে কেউ কেউ উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশ থেকেও লোকজন নিয়ে আসছেন এবং এতে করে পণ্য ও সেবার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুগোপযোগী তথা মানসম্মত স্নাতক তৈরির উদ্যোগ খুবই সীমিত। এ ব্যাপারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রশংসা করে তিনি বলেন, তাদের ন্যায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন তা পারছে না, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উচিৎ তা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গভীরভাবে পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের আহ্বান জানান।
রাজধানী ঢাকার বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত উক্ত বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউ’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মমিনুল হক মজুমদার। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোঃ সবুর খান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র শিক্ষা বিষয়ক ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল এবং ব্যবসায় ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মাসুম ইকবাল এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আবু তাহের খান।
ড. মো. সবুর খান বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যে বিশাল অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে তার জন্য মেজর জেনারেল (অবঃ) আমজাদ খান চৌধুরীর মতো মানুষ আমাদের দেশে সবসময়ই স্মরণীয়। আমরা সৌভাগ্যবান যে তাদের মতো মানুষেরা আমাদের অর্থনীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনো তার সুযোগ্য সন্তানেরা সেই ধারা অব্যহত রেখেছেন। আমি আশা করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের কথা পড়বে, শুনবে এবং সেই অনুযায়ী তারাও এক সময় আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মমিনুল হক মজুমদার বলেন, মেজর জেনারেল (অবঃ) আমজাদ খান চৌধুরী সাহেবের মতো মানুষ ও প্রাণ গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমাদের শেখার অনেক জায়গা আছে। আজকের এই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান থেকেই আমরা সবাই উপলব্ধি করতে পারলাম, ব্যবসা করার জন্য টাকার চাইতে বরং কত বেশি পরিমাণ মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতেই উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা বিভাগ রয়েছে, আশা করি আমাদের শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন ও মোঃ আমজাদ হোসেন খান চৌধুরীর সাহেবের দিক নির্দেশনা থেকে অনেক কিছুই অর্জন করেছে।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যাগে শিল্প-শিক্ষায়তন বক্তৃতামালা প্রথম শুরু হয় ২০১৬ সালে এবং সেই থেকে প্রথম পর্বের আওতায় মোট ১৩ জন দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট উদ্যোক্তা উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের বক্তব্য রাখেন, যেগুলোর একটি বড় অংশ পরে প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়।
উল্লিখিত বক্তৃতামালার সাথে সঙ্গতি রেখেই ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি ১৯৪৭-পূর্ব সময়ে জন্মগ্রহণকারী দেশের ১২ অগ্রণী বরেণ্য উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে ‘পথিকৃৎ উদ্যোক্তাদের জীবনসংগ্রাম’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে। ড. মো. সবুর খানের সম্পাদনায় প্রকাশিত উক্ত গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ড শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে জানা যায়, যেখানে ১৯৪৭-৭১ মধ্যবর্তী সময়ে জন্মগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের জীবনবৃত্তান্ত অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category